Shopnobilap
Oritrir Chelebela
ছেলেবেলায় অরিত্রী

অরিত্রির ছেলেবেলা

নাম টা বেশ ভালো, শুনে মনে হয় কোন এক আভিজ্যাত্য পরিবারে জম্ন। সবার দেয়া নাম তো তাই হয়তো এমন। যেন সবাই যাচাই বাছাই করেই নামটা রেখেছে। অরিত্রির সাথে ছোট্ট একটা সংলাপ হয়েছিল আমার, নাম টা কে দিয়েছে জানতে চাইলে উঠে আসে তার আসল পরিচয়। শুনেছি অচেনা এক কাকা তাকে এই নাম টা দিয়েছে। অরিত্রি বলেছে কাকার কাছে এই নামটার একটা বরো রহস্য আছে যা সে কখনই কউকে বলেনি এমনকি অরিত্রি কে ও না।

Oritrir Chelebelaঅরিত্রিকে নিয়ে গল্পটা আমার লেখার ইচ্ছা ছিল যখন আমি ক্লাস ৮ এ পরতাম। হয়তো সময়ের অভাবে, হয়তোবা অবহেলায় হয়তোবা অভ্যাস না থাকায় লেখা হয়নি। কিন্তু আজকে অরিত্রির ছেলেবেলা যেন না লিখে কোন ভাবেই থাকতে পারলাম না। হয়তো ক্লাস ৮ এর সেই সময়টাতে লিখলে অরিত্রির জন্য ভাল কিছু হতে পারতো। সেদিন ছিল জুন মাসের ২৫ তারিখ, অফিস যাওয়ার জন্য সকালে ঘুম থেকে উঠতেই কোন কারন ছারাই মনটা খারাপ হয়ে গেল। একটু তারাহুর করে বেরহতেই বাস উঠে মনে হলো ভুল করে ম্যানিব্যগটা রেখে এসেছি। কি করব বুঝতে পারছিনা | এ দিকে অফিসেতো যেতে হবে | হটাৎ বাড়ি থেকে ফোন আাসলো, আমিতো অবাক, কোনো কারন ছারা আমাকে বাড়ি থেকে ফোন দেওয়া হয়না মনে হতেই বুকের বামপাশে এক অস্থির হাহাকার সৃষ্টি হলো । জানতে পারলাম অরিত্রি আজ সকালে মারা গেছে। কি কিরবো বুঝতে না পেরে নেক্সট স্টপেজে নেমে পরলাম। অফিসে না গিয়ে ছোট্ট একটা চা স্টলে বসে এককাপ চা আর একটা সিগারেট খেয়ে বাড়ির দিকে রওনা হলাম |

জেলখানার মতো ছোট একটা ঘরে তাকে রাখা হতো। শুনেছি জন্মের ১ বছর পর তার বাবা মা ২ জন একসাথে আত্নহত্যা করেছে, তার পর থেকে অরিত্রি একা।সেই থেকে শুরু একাকিত্ব অরিত্রির ছেলেবেলা | আমার কিছুতেই মাথায় ঢুকেনা এতটুক বয়সের শিশুকে কেউ ডাস্টবিনে ফেলে দেয়। হয়তো অরিত্রি সর্ম্পকে না জানলে পৃথীবিতে এখনো এতে খারাপ মানুষ বেচে আছে জানতামই না। সম্পত্তির লোভে অরিত্রির আপন চাচা তাকে ডাস্টবিনে ফেলে দিয়ে যায় | এটা অরিত্রী তার সেই কাকার কাছে শুনেছে |

প্রতিদিন বিকেলে মাঠে খেলতে গিয়ে আমি প্রায়ই খেয়াল করতাম ছোট্ট একটা মেয়ে জানালা দিয়ে উকি দেয়ার চেস্টা করতো, একদিন বল কুরানোর ছলে জানালার ধারে গিয়ে জিগ্গেস করলাম, তোমার নাম কি? কিছুখন চুপ করে থাকার পর আমাকে বল্লো তুমি আমাকে অরিত্রি বলে ডাকতে পারো। তার কথা শুনে অবাক দৃষৃটিতে কিছুখন তাকিয়ে রইলাম হঠাৎ সে আবার বলে উঠলো ভাইয়া তুমি আমাকে ভাত খাইয়ে দেবে যেমনটি পাসের বারির ভাইয়াটা তার বোন কে দেয়। তার কথা শুনে মনে
হলো তাকে বুকে জরায় ধরে বলি তোকে আমি প্রতিদিন খাইয়ে দিব। কিন্তু সিকিউরিটি তা হতে দিলনা।

এরপর অনেক চেষ্টা করছি বারিতে নিয়ে জেতে কিন্তু পারিনি। কত্পক্ষ কোন ভাবেই রাজি না। অবোশেসে বাবা মা এর অনেক অনুরধে তাকে প্রতিদিন খাবার খইয়ে দিতে সুজগ পেলাম।

আমি প্রায়ই অরিত্রিকে বলতাম তুই আমার সাথে বাহিরে জাবি। ও কোন কথা বলতো না শুধু ইশারায় বুঝিয়ে দিত জাবোনা। একদিন বলেই ফেললো তুমি জানোনা ভাইয়া এরা আমাদের অনেক মারে। গতোকাল রাতে একজন কে হসপিটালে রেখে এসেছে। ওর কথা শুনে মনে হলো সিকিউরিটি রাজাকারের বাচ্চার কলিজাটা ছিরে কুকুর কে দিয়ে খাওয়াই |

শেষবার যখন অরিত্রীর সাথে দেখা হয় তখন তার বয়স ছিল ৯ বছর | লেখা পরার উদ্দেশে ঢাকায় চাচার বাসায় আসছিলাম | বিদায়ের সময় অরিত্রী বলেছিল ভাইয়া ভালো থেকো | সেই প্রথমবারের জন্য কারো জন্য চোখের জল ফেলেছিলাম | আমি ঢাকা চলে আসার কিছুদিন পর বাবা মা ও ঢাকা চলে আসে তারপর অরিত্রীর সাথে আর দেখা এবং কথা কোনটাই হয়নি | গত ২ মাস আগে বাবা মা গ্রামের বাসায় গেছে, সেই সুত্রে খবর পেলাম অরিত্রী হসপিটালে ভর্তি, ওর অবস্থা খুব একটা ভালো না | বাবা মা কে বলে অনেক কষ্টে ওর সাথে একবার কথা বলছিলাম | অরিত্রী তখন ও বলেছিল ভাইয়া শেষবারের মত আমাকে একবার খাইয়ে দেবে | আমি বলেছিলাম আগামী সপ্তাহে আমি বাড়িতে যাবো, তোকে নিজের হাতে খাইয়ে দেব | অরিত্রীর বয়স এখন 14 বছর আল্লাহতালা হয়ত তার ভাগ্গে আর কয়েকটা দিন লেখেনি |

সেই চা স্টল থেকে আর কোথাও না সরাসরি নিজ গ্রামে ফিরে এসেসিলাম চা খাওয়ার টাকা টা ও দোকানদার কে দেওয়া হয়নি | এখন আমি জেল খানার মত সেই ঘরগুলোর সিকিউরিটি যেখানে অরিত্রীর ছেলেবেলা কেটেছে | আজ আমি প্রতিজ্ঞাবদ্ধ যে আর কোনো অরিত্রী কে অভাবে চলে যেতে দিব না যতটা পারি আগলে রাখব | এখন আমি এই ছোটশিশু গুলোর দেখাশুনা করি | এদের মধ্যে আমি আমার অরিত্রিকে খুঁজে পাই, খুঁজে পাই অরিত্রির ছেলেবেলা | কিন্তু নামটার রহস্য আজ ও খুঁজে পেলাম না | অরিত্রির ছেলেবেলা এখনো আমাকে কাদায় |

1/5 - (3 votes)

Muradul Hasan

x